আমার মেয়েকে‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের সম্পর্ক সমমর্যাদার নয় বরং এ সম্পর্ক প্রভু আর দাসসুলভ! : বিশ্বের অন্যতম একক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্তহীন সমস্যা জর্জরিত ভারতের সম্পর্ক যে সমমর্যাদার ভিত্তিতে নয়, অনেকটা প্রভু আর দাসসুলভ তা ভারত প্রায় ভুলতেই বসেছিল। কিন্তু ভারতের একজন শীর্ষস্থানীয় নারী কূটনীতিককে তার দুই সন্তানের সামনে থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেফতার করে হাতকড়া পরানো, এরপর বিবস্ত্র করে দেহ তল্লাশি এবং শেষমেশ নেশাখোরদের সঙ্গে কয়েদখানায় নিক্ষেপ করে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র হয়ত বা সমস্যায় জর্জরিত ভারতকে মনে করিয়ে দিল এ সম্পর্ক সমমর্যাদার নয় বরং এ সম্পর্ক প্রভু আর দাসসুলভ! এদিকে অনলাইন নিউজপোর্টাল বিডিনিউজের একটি খবর উল্লেখ না করলেই নয়। ‘দেবযানি কাণ্ডের পেছনে কূটনৈতিক বিরোধ’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংয়ের যুক্তরাষ্ট্র সফরের মধ্যেই কূটনীতিক দেবযানি খোবরাগাড়েকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত হয়, যার পেছনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে দুই দেশের মতপার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন দিল্লির এক কর্মকর্তা। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সুজাতা সিং ওই সফরে বেশ কয়েকটি স্পর্শকাতর বিষয়ে ভারতের অবস্থান ওয়াশিংটনের সামনে তুলে ধরেন, যার শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের মতপার্থক্যের বিষয়টি। দেবযানিকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের একটি বার্তা দিতে চেয়েছে, যাতে আমরা ভেঙে পড়ি। এটা বিশ্বাস করার মতো যথেষ্ট কারণও আছে।’ ফ্রিল্যান্সিংয়ের অথবা আঊটসোর্সিং - মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা তিনি জানান, এর আগে রাশিয়ার একাধিক কূটনীতিকের বিরুদ্ধে বীমা জালিয়াতির অভিযোগ উঠলেও মার্কিন প্রশাসন নিউইয়র্ক পুলিশ বা অ্যাটর্নির কার্যালয়কে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেয়নি। দেবযানির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগের কথা তারা বলছে, রুশ কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুতর। গৃহকর্মীর ভিসা আবেদনে মজুরি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেয়া এবং তাকে চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক না দিয়ে বেশি কাজ করানোর অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় কনস্যুলেটের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানি খোবরাগাড়েকে গ্রেফতারের পর প্রকাশ্যে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায় নিউইয়র্কের পুলিশ। থানায় নেয়ার পর ওই কূটনীতিককে বিবস্ত্র করে তল্লাশি চালানো হয় এবং তাকে মাদক চোরাচালানি ও যৌনকর্মীদের সঙ্গে একই কারাকক্ষে রাখা হয় বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু রাশিয়ানদের ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। কারণ, তাতে কূটনৈতিক সম্পর্ক নষ্ট হবে বলে মস্কো হুমকি দিয়েছিল। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলছেন, নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ভারত সরকার যে অবস্থান নিয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্র হতাশ (তবুও তারা ক্ষুব্ধ বলতে নারাজ)। এই মতপার্থক্যের বিষয়টি প্রকাশ্য। এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু সুজাতা সিং যখন ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, তখনই যুক্তরাষ্ট্র আমাদের এই শক্ত বার্তা দিতে চাইল।’

নিউইয়র্কের ভারতীয় কনস্যুলেটর ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানির বাবা উত্তম খোবরাগাড়ে আজ মঙ্গলবার জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছে। দেবযানিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য উত্তম খোবরাগাড়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।উত্তম খোবরাগাড়ে টাইমস আব ইন্ডিয়াকে বলেন, সরকার তাঁর মেয়েকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তাঁর মেয়েকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।

Related posts

Leave a Comment